প্রজন্ম রিপোর্ট
কেশবপুরে অধিকাংশ মুরগীর ফার্ম ও হ্যাচারী লোকালয়ের ভেতর গড়ে তোলা হয়েছে। এ উপজেলায় ৮৫৫ টি মুরগীর ফার্ম ও হ্যাচারী থাকলেও অধিকাংশরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে মুরগীর ফার্ম ও হ্যাচারীর মালিকদের নিবন্ধন করার জন্য পত্র দিলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পেয়ে নিবন্ধন করতে পারছে না।
যে কারণে সরকার বড় ধরণের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে ১২টি ফার্ম ও হ্যাচারী ছাড়া অধিকাংশের বর্জের দূর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। কেশবপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫২০ টি সোনালী ও ২৮০ টি বয়লার ফার্মে মাংস উৎপাদন হয়।
এছাড়া ৫৫ টি লেয়ার ফার্মে ডিম উৎপাদন হয়ে থাকে। এ উপজেলায় মোট ১৮ লাখ ৬০ হাজার ৯৫২টি মুরগি রয়েছে এসব ফার্মে। এরমধ্যে আফিল এ্যাগ্রো লিমিটেড ব্রিডার ডিভিশনে রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার মুরগি। ৫৫টি ফার্ম থেকে প্রতিদিন ডিম উৎপাদন হয় ১ লাখ ২১ হাজার ১৯৭টি।
এর মধ্যে প্রতি সপ্তাহে আফিল এ্যাগ্রো লিমিটেড ব্রিডার ডিভিশন হ্যাচারীতে বাচ্চা উৎপাদন হয় ১ লাখ ও আজাদ পোল্ট্রি এন্ড ব্রিডার্স লিমিটেডের হ্যাচারীতে বাচ্চা উৎপাদিত হয় ১৯ হাজার। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরে নিবন্ধীত হতে নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হয়।
এছাড়াও প্রতিবছর ওই নিবন্ধন নবায়ন করতে হয়। কেশবপুরে অবস্থিত আফিল এ্যাগ্রো লিমিটেড ব্রিডার ডিভিশন ও আজাদ পোল্ট্রি এন্ড ব্রিডার্স লিমিটেডসহ ১২টির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরে নিবন্ধন রয়েছে।
পরিবেশ সম্মতভাবে বর্জ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা না থাকায় ইতিমধ্যে ৪টি ফার্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাচ্চা উৎপাদন হয় না এমন পচা ডিম ফার্ম ও হ্যাচারীর মালিকরা ভেঙে ড্রামজাত করে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বেকারীতে সরবরাহ করে থাকে।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসীম উদ্দীন বলেন, সম্প্রতি ফাতেমা পোল্ট্রি ফার্ম ও হ্যাচারী থেকে পচা ও খাওয়ার অনুপযোগি ডিম সরবরাহের অভিযোগে হ্যাচারী মালিক ও তার ভাইয়ের নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় মামলা হয়েছে। যার নং: ১৩। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার প্রকাশ কুমার মন্ডল বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে কেশবপুরে শত শত মুরগীর ফার্ম রয়েছে। পরে হ্যাচারীও গড়ে তোলা হয়।
এর ভেতর ১২টি ফার্ম ও হ্যাচারীর নিবন্ধন রয়েছে। বাকী ফার্ম ও হ্যাচারীর মালিকদের প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের নিবন্ধন করার জন্য পত্র দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় তারা নিবন্ধন করতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ হারুন-অর-রশিদ বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় কোন ফার্ম ও হ্যাচারী করা যাবে না।
পরিবেশ সম্মতভাবে বর্জ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করতে পারবে এমন ফার্ম ও হ্যাচারীর মালিকরা আবেদন করলে যাচাই বাছাই করে বিধি সম্মতভাবে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ১০ থেকে ১২ টি ফার্ম ও হ্যাচারীকে পরিবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।